মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই জ্যেষ্ঠ নেতার অবমাননাকর কটূক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে কুষ্টিয়াবাসী। সমাবেশ থেকে বিশ্বনবীকে (সাঃ) নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ভারতীয় সরকারের দুই নেতাকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। কুষ্টিয়া উত্তাল এন এস রোড জুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিক্ষুদ্ধ ধর্মপ্রাণ জনতা।
শুক্রবার (১০ জুন) আছর নামাজের পর বড় বাজার জামে মসজিদ থেকে শহরের এন এস রোড হয়ে বের করা হয় বিক্ষোভ মিছিল। স্লোগান মুখর হাজারো মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুরো নগরী উত্তাল হয়ে উঠে। বিকেল ছয়টার দিকে শহরের বক চত্বরে ইসলামী আন্দোলন, কুষ্টিয়া জেলা শাখা ব্যানারে মানববন্ধন সমাবশে করা হয়।
এতে সাধারণ মুসলিমরা বলেন, পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব রাসুল (সা.) কে নিয়ে জঘন্য মিথ্যাচার করেছে বিজেপির দুই নেতা। এর প্রতিবাদে দ্বীনি মুসলমানরা জেগে উঠেছে। মুসলমানদের শেষ রক্তবিন্দু থাকতে আমরা আমাদের রাসূলকে (সাঃ) নিয়ে অবমাননা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সমাবেশ থেকে ভারতের পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেয়।
এ সময় বক্তারা আরও বলেন, বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আগুন জ্বলছে। বিশ্ব মানবতার অগ্রদূত মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (সা:) নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতা যে কটূক্তি করেছে, তা সহ্য করার মতো নয়। সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী ভারত সরকারের নেতারা সারা বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করেছে।
বিজেপি সরকার ইসলাম বিদ্বেষী। তাদের লোকজন ইচ্ছাকৃত মুসলামানদের উসকে দিতে চেষ্টা করছে। যেখানে স্বয়ং মহান আল্লাহ নিজেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদের (সা:) চরিত্রের সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন, সেখানে ভারতের দুজন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজ নেতা বিশ্বনবীকে নিয়ে অবমাননাকর কটূক্তি করে ক্ষমা অযোগ্য অপরাধ করেছে। অবিলম্বে এই অপরাধের জন্য বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।
এদিকে জুমার নামাজ আদায়ের পর নগরীর বেশকিছু পাড়া-মহল্লার মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ বিক্ষোভ ও সমাবেশ থেকে গোটা বিশ্বের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ভারতের ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনাসহ ভারতকে বয়কট করার আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশ থেকে কটূক্তিকারী দুই নেতাকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে ভারত সরকারের দাবি আহ্বান জানান ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও আহ্বান জানান তারা।
প্রসঙ্গত, ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা এক টেলিভিশন শো-তে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নূপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।