গাজীপুরের শ্রীপুরে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা ও পাল্টাহামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপির মনোনীত মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট কাজী খানের নির্বাচনি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এতে হামলাকারীদের ধারালো দায়ের কোপে বিএনপির মেয়রপ্রার্থীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার সার্কেল এএসপি ও অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা দা, লাঠিসহ মোটরসাইকেল নিয়ে পৌরশহরে মিছিলসহ মহড়া দেয়। এতে স্থানীয় লোকজন আতংকিত হয়ে পড়ে।
রোববার পৌরশহরের রেল স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার সময় সাধারণ মানুষ ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটে যায় এবং আশপাশের দোকানিরা ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।
প্রথম দফা হামলার পরপরই দুপুরে আরও দুই দফা হামলায় ধারালো দায়ের কোপে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট কাজী খান ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল মন্ডল, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওবায়দুর রহমান সোহেল মন্ডল, শ্রমিকদল নেতা খোরশেদ আলম, যুবদল নেতা আনোয়ার বেপারী, স্বেচ্ছাসবক দল নেতা রাজিবুল বেপারী, ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল মাহমুদ, ছাত্রদল নেতা আরাফাত বেপারী, আমিনুল ইসলাম, যুবদল নেতা সবুজ প্রধান, শ্রমিকদল নেতা সেলিম, রাহাত হাসান জুয়েলসহ অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। ওই সময়
হামলাকারীরা বিএনপির নির্বাচনি কার্যালয়ের সামনে থাকা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
বিএনপির মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট কাজী খান বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রথমে মোটরসাইকেল নিয়ে পৌর এলাকার শ্রীপুর সদরে বিএনপির কার্যালয়ের ভেতর বসে থাকা নেতাকর্মীদের ওপর উঠিয়ে দেয়। ওই সময় তার ৫ সমর্থক আহত হন। এ সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা অফিসে ঢুকে এলোপাতাড়ি চেয়ার, টেবিল, গস্নাস, নির্বাচনিসামগ্রী ভাঙচুর করে। এর আগে দক্ষিণ ভাংনাহাটি গ্রামের পাগলাবাড়ি এলাকায় বিএনপির নির্বাচনি ক্যাম্পেও তারা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজয় নিশ্চিত জেনে আমার অফিসে হামলা চালিয়েছে এবং আমাকে নির্বাচনি প্রচারণা করতে না দেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকি ধমকি দিচ্ছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানানো হয়, এসব হামলার সাথে আওয়ামী লীগ বা সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত নয়। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত শাহ আলমের লোকজন হামলার ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম মোলস্না জানান, জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মিছিলে বিএনপির কার্যালয় থেকে অতর্কিত ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা আলিম মোস্তাফা, রাসেল, হুমায়ুন, হামিদুল, ছাত্রলীগ নেতা মাছুম মন্ডলসহ ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা হবে। পরে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
পৌরসভা রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ যায়যায়দিনকে বলেন, হামলার ঘটনায় মৌখিকভাবে অবগত হয়ে সাথে সাথেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুপক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছেন। সময়মত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।