নৈশপ্রহরীর চাকরি করতেন। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। আরেকজন এখনো ইস্তফা দেননি। তবে মেয়র প্রার্থী। এ নিয়ে এলাকায় রীতিমত হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন তারা।
অবশ্য দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় দুই নৈশপ্রহরী দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তারা প্রার্থী থাকেন কি না সেটাই দেখার বিষয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা মহিলা কলেজের নৈশপ্রহরী ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান নিজ পৌরসভার মেয়রপ্রার্থী হয়েছেন।
দলীয় মেয়র প্রার্থী আমির হোসেন আমিনের বিপরীতে তিনি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তবে তিনি কলেজের নৈশপ্রহরীর চাকরি থেকে ইস্তফা দেননি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে বাগমারা উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীর চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কামাল হোসেন। তার মেয়র প্রার্থী হওয়া নিয়ে এলাকায় মুখরোচক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে নিজের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে ছোটবেলার ইচ্ছা পূরণের কথা জানিয়েছেন।
তানোর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হোসেন বলেন, তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র গোলাম রাব্বানীর ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠা সাইদুর রহমান কর্মজীবনে টোকাই থেকে হাটের কুলিও ছিলেন। মেয়র রাব্বানীর আনুকূল্যে তিনি মুণ্ডমালা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নিজের জায়গা করে নেন। এমন একজন ব্যক্তি মেয়রপদে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় ওই এলাকায় মুখরোচক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মজিদও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। বিজয়ের সম্ভাবনার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্থানীয় সাংসদের সম্মানে স্বেচ্ছায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। অথচ মুণ্ডমালার নৈশপ্রহরী কি জাদুর বলে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মেয়র প্রার্থী হওয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন তা বোধগম্য নয়।
তবে সাইদুর রহমান অবশ্য বলেন, এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। দলের মনোনয়ন তার দরকার নেই। তার প্রতি জনগণের আস্থা আছে। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোনো বাধা নেই।
এদিকে বিএনপির একক মেয়র প্রার্থী হয়েছেন ফিরোজ কবির। তিনি তানোর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। আগামী ১১ জানুয়ারি প্রার্থীতা প্রত্যাহার এবং ৩০ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।
বাগমারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যতসংখ্যক ভোটারের সমর্থন প্রয়োজন, সঠিক প্রমাণসহ ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র প্রার্থী কামাল হোসেন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিয়েছেন। তিনি ভবানীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, তফসিল ঘোষণার আগেই কামাল হোসেন নিজেকে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালান। ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে ফেস্টুনও টাঙিয়ে ছিলেন। তবে স্থানীয় লোকজনের ধারণা ছিল তার দৌড় ওই পর্যন্তই।
সাইদুর রহমান ও কামাল হোসেনের মেয়র প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী জেলার সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন বলেন, ভোটাররা চাইলে অবশ্যই তারা মেয়র প্রার্থী হতে পারেন। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কিছু নেই।
উল্লেখ্য, ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ ১৬ জানুয়ারি। গত ১৫ ডিসেম্বর কামাল হোসেন নৈশপ্রহরীর পদ থেকে ইস্তফা দেন।