অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় শেষে চক্রের নারী সদস্যদের সঙ্গে ‘অশ্লীল ছবি’তুলে ছেড়ে দেওয়া হতো ভুক্তভোগীদের। লোকলজ্জার ভয়ে ভিকটিম যাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে না পারে, সেই জন্যই চক্রটি এমন অভিনব কৌশল প্রয়োগ করতো।
অপহরণ চক্রটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা প্রথমে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করত। ২-৩ লাখ টাকা পেলেই তারা ভিকটিমকে ছেড়ে দিতো।
রবিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব কথা বলেন।
কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গত ২৯ জানুয়ারি উত্তরা হাউজ বিল্ডিং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল ভিকটিম। এ সময় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ভিকটিমকে কৌশলে মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা ভিকটিমের স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। মুক্তিপণ পাওয়ার পর চক্রটির সদস্যরা ভিকটিমকে উত্তরার ল্যাব এইড হাসপাতালের সামনে ফেলে যায়। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর ডিবি উত্তর বিভাগের একটি দল এই চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. সাদেকুল ইসলাম, মো. ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, মো. কুতুব উদ্দিন, মো. মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি
চক্রটি রাজধানীর কোন এলাকায় কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উত্তরা ও ঢাকা দক্ষিণের কিছু এলাকায় তাদের কার্যক্রমের ছাপ আমরা পেয়েছি। আসলে ঢাকার যেই জায়গায় সুবিধা পায় সেই জায়গা থেকে তারা অপহরণ করে। এক্ষেত্রে তারা সাধারণ মানুষদের অপহরণ করতো। যাতে করে মিডিয়ায় বেশি আলোচনা না হয়। প্রথমে তারা মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করলেও দুই থেকে তিন লাখ টাকা পেলে ভিকটিমদের ছেড়ে দিতো তারা। তবে ভিকটিমকে ছাড়ার আগে চক্রটির নারী সদস্যদের দিয়ে অশ্লীল ছবি তুলে রাখতো যাতে ভিকটিম লজ্জার ভয়ে পুলিশের কাছে না যায়।